রাজনীতি

জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন: তারেক রহমান

  প্রতিনিধি ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১:১১:৪৯

শেয়ার করুন

জনগণের মন জয় করার জন্য নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, বিএনপির সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমরা ক্ষমতায় যাইনি, যাব কিনা জানি না। তখনই ক্ষমতায় যেতে পারব, যখন জনগণের সমর্থন পাব। নেতাকর্মীদের সকল কর্মকাণ্ড হচ্ছে বিএনপির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামী দিনে এমন হতে হবে যাতে জনগণ আপনার সঙ্গে থাকে, বিএনপির সঙ্গে থাকে। দলকে রক্ষা করা, সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সকলের। আপনাকে আপনার দায়িত্ব পালন করতে হবে। জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে সঙ্গে রাখুন। বাংলাদেশের জনগণের আস্থা বিএনপির ওপর আছে। এটি ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার এবং আমাদের সকলের।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপি প্রদত্ত ৩১ দফা বিষয়ক খুলনা বিভাগীয় কর্মশালায় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় এবং খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

 

তিনি বলেন, সামনের যে নির্বাচন হবে, এটি এতো সহজ না। এই নির্বাচন বাংলাদেশের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে অনেক কঠিন হতে যাচ্ছে। মানুষের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। কেউ যদি কোনো ভুল করে থাকে তাহলে একজন নেতা হিসেবে তাকে সঠিক পথে নিয়ে আসা আপনার দায়িত্ব। দেশ সকল মানুষের জন্য। গত কিছুদিন সমাজের কিছু ব্যক্তি সংস্কারের কথা বলছে। গত ৫ মাস আগেও তারা বলেনি। কিন্তু বিএনপি দুই বছর আগে থেকে বলছে।

 

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি দেশ ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে। ৩১ দফা তারই প্রমাণ। গত ৩ থেকে ৪ মাস সংস্কারের যে কথা বলছে তা আমরা আগেই বলেছি। তার সবকিছুই ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে। এই ৩১ দফা শুধু বিএনপির তা নয়, বাংলাদেশের পক্ষে গণতান্ত্রিক সকল দলের। ৩১ দফা সফল করতে যে কোনো মূল্যে জনগণের সমর্থন রাখতে হবে। দলের পক্ষে পরিকল্পনা নিতে হবে। কীভাবে জনগণকে পাশে রাখবেন। সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের সমর্থন আমাদের পক্ষে রাখা। একইসঙ্গে আমাদের পরিকল্পনা যাতে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি। ৩১ দফার সকল কিছু জনগণের মাঝে নিয়ে যেতে হবে। জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের প্রতি জনগণের আস্থা যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে হবে।

তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আপনারা সংগ্রাম করে যেভাবে টিকে ছিলেন, তার থেকে সহজ হবে এই কাজটা জনগণের ঘরে পৌঁছে দেওয়া। এতো কঠিন পথ যদি আপনারা পাড়ি দিয়ে আসতে সক্ষম হয়ে থাকেন। তাহলে একটু কষ্ট করলেও ৩১ দফা আমরা জনগণের মাঝে নিয়ে যেতে পারি। এই কাজ আপনারা খুব সহজে সকলকে সাথে নিয়ে করতে সক্ষম হবেন।

 

এর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে ফ্যামিলি কার্ড এবং কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড তৈরি করব। ফ্যামিলি কার্ডটি হবে পরিবারের মা বা স্ত্রীর নামে। এতে তার পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা বাড়বে। একই সঙ্গে কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড করা হবে। যা প্রতি মৌসুমে কৃষকের সার-বীজ বা আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করবে। নারীর যোগ্যতা ও মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করা উচিৎ। এটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করা উচিত। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে নারীদের জন্য শিক্ষাব্যবস্থা ফ্রি করে দিয়েছিলেন।

 

তারেক রহমান বলেন, প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি ফ্যামিলি কার্ড তৈরি করব। প্রান্তিক মানুষকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মিনিমাম সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। এটি সব শ্রেণিপেশার মানুষ পাবে। ফ্যামিলি কার্ডটি পরিবারের মা বা স্ত্রীর নামে দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে তার মর্যাদা বাড়বে। আর যে অর্থ সাশ্রয় করবে সেই অর্থ সন্তানের স্বাস্থ্য ও লেখাপড়ায় ব্যয় করবে। এতে ভবিষ্যৎ সুন্দর একটি প্রজন্ম তৈরি হবে। সঞ্চিত অর্থ ৫ থেকে ১০ বছর পর তার অর্থনৈতিক শক্তি হবে। এতে পরিবারে তার আত্মমর্যাদা বাড়বে।

 

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আনিদ্য ইসলাম অমিতের সভাপতিত্বে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়ার সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ আলমগীর পাভেল, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, বিএনপির সহ ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলী প্রমুখ। কর্মশালায় খুলনা বিভাগের ১১টি ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content