প্রতিনিধি ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৭:৩০:০৮
বগুড়ার সোনাতলায় বিএনপি নেতার হামলায় আহত যুবদল নেতা রাশেদুল হাসান (২৭) মারা গেছেন। তিনি সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) বিকেল সাড়ে ৫টায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আহত রাশেদ
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক হারুনার রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় পাকুল্লা বাজারে রাশেদুলের উপর হামলা করে পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান বাটালু ও তার লোকজন।
এদিকে রাশেদুলের মৃত্যুর খবর শুনে বিএনপি নেতা বাটালু ও তার সহযোগীদের ৪-৫ টি বাড়ী ভাঙচুর করে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা।
পাকুল্লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে রাশেদুলের উপর হামলা করা হয় বলে জানানপাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী হাসান নারুন। তিনি জানান, গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী)
সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা জিয়া সাইবার ফোর্স এর সহ-সভাপতি যুবদল নেতা রাশেদ মটরসাইকেল যোগে যাওয়ার সময় বাটালুর নেতৃত্বে তার লোকজন ধাওয়া করে। রাশেদ মটরসাইকেল ফেলে রেখে একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানেই পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
জিয়া সাইবার ফোর্স কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে হত্যাকারীদের বিচারের দাবি
স্থানীয়রা জানান, পাকুল্লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে এলাকাবাসী তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হান্নান বাটালু, আরেক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলী হাসান নারুন এবং অপর গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন বগুড়া শহর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারী মাজেদুর রহমান জুয়েল। এই বিভক্তি থেকে গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান জুয়েল ২৫-৩০ টি মটর সাইকেল নিয়ে পাকুল্লা বাজারে মহড়া দেয়। সেই দিন আব্দুল হান্নান দাবী করেছিলেন মাজেদুর রহমান জুয়েল তার বাড়িতে আক্রমণ করতে যায়। সেই মটরসাইকেল বহরে যুবদল নেতা রাশেদ ছিল। মাজেদুর রহমান জুয়েল ফিরে যাওয়ার পর কে বা কারা রাশেদুলের উপর হামলা করে।
জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান জুয়েল বলেন, আমি গ্রামের বাড়িতে যাই, সেখানে মসজিদে জুম্মার নামাজে ইমামতি করি। পরে একটি বিয়ের দাওয়াত খেয়ে ফিরে আসি। বাটালুর বাড়িতে আক্রমণ করতে যাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।
এদিকে জিয়া সাইবার ফোর্স কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রুহুল আমিন (আলামিন) এর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করা হয়। শোকবার্তায় জিয়া সাইবার ফোর্স কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) দেওয়ান মোহাম্মদ আলফাজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল আউয়াল তালুকদার (রবি) রাসেদ র’ মৃত্যুতে অত্যন্ত মর্মাহত ও ব্যথিত হয়েছে, মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছেন। শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। মহান আল্লাহ পাক যেন পরিবারের সবাইকে শোক কাটিয়ে উঠার তাওফিক দান করেন। এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
জিয়া সাইবার ফোর্স কেন্দ্রীয় নেতাদের শোকবার্তা
সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিলাদুন্নবি বলেন, পাকুল্লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন ধরে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেই জের ধরেই রাশেদ নামের একজনকে মারধর করা হয়। শুক্রবার রাশেদ মারা গেলে তার পক্ষের লোকজন বাটালু ও তার লোকজনের ৪-৫ টি বাড়ি ভাঙচুর করে। এর আগেই বাটালু ও তার লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। রাশেদুল মারা যাওয়ার খবরে পাকুল্লা বাজারে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ওসি বলেন, রাশেদের উপর হামলার ঘটনায় থানায় কেউ মামলা করেনি।
বগুড়া জেলা জিয়া সাইবার ফোর্সের সহ-সভাপতি রাশেদের জানাযায় জনতার ঢল
ময়না তদন্তের পর রাশেদের জানাযায় হাজার হাজার জনতা উপস্থিত হোন।