অন-লাইন

সোশ্যাল মিডিয়ায় আবারো আলোচনায় পিনাকী ভট্টাচার্যের জালিয়াতি

  প্রতিনিধি ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৬:১৮:৫০

শেয়ার করুন

নিজস্ব সংবাদদাতা: পিনাকী ভট্টাচার্য একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। তার একটা বিশাল ভক্ত বেজ আছে। পিনাকী ভট্টাচার্জ ২০১৩ সালে শাহবাগে গণজাগন মঞ্চের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং আইন আদালতের তোয়াক্কা না করে গণজাগরণ মঞ্চের গণদাবি নামক মব তৈরি করে সরকারকে বাধ্য করে জামায়াতের নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারার অন্যতম কুশীলব ।

২০০৮ সালের মে মাসে কালাজ্বর এর ঔষধ তৈরী নিয়ে পিনাকীর জালিয়াতি আবারো সোশ্যাল মিডিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে। বাংলাদেশ মেডিকেল বার্তা নামক একটি পেইজে ২৪শে এপ্রিল ২০২১ সালে একটি পোস্ট শেয়ার করা হয় আর এর মাধ্যমেই প্রথম জনসম্মুখে আসে পিনাকীর ঔষধ জালিয়াতির খবর। কি আছে এই পোস্টটিতে দেখা যাক –
বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক জালিয়াতের নাম Pinaki Bhattacharya – পিনাকী ভট্টাচার্য এবং পপুলার ফার্মাসিটিক্যালস। ২০০৮ সালে পিনাকী ভট্টাচার্য পপুলারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সাথে সিন্ডিকেট করে কয়েক কোটি টাকা লুটপাট করে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে বিষয়টি নিয়ে তখন তেমন কোন আলোচনা হয়নি।
লজ্জার ব্যাপার যেই পিনাকী ভট্টাচার্য কালাজ্বরের ক্যাপসুলে ময়দার দলা পুরে কোটিপতি হয়েছে, তার কাছ থেকেই আজকে আমাদের সবার নৈতিকতার সবক নিতে হয়।
২০০৮ সালের মে মাসে কালাজ্বর নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সারা দেশে কালাজ্বরে আক্রান্ত রুগিদের মধ্যে বিনামূল্যে পপুলারের তৈরি ক্যাপস্যুল মিল্টেফস (মিল্টেফসিন) বিতরণ শুরু করে। ঋণ হিসেবে টাকাটা দেয়ার কথা ছিল ডব্লিউএইচওর, কিন্তু শর্ত ছিল যেসব ওষুধ কেনা হবে, সেগুলো আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে এবং উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ঐ ওষুধ উৎপাদনের কমপক্ষে ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা লাগবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টেন্ডার দিলে তাতে আবেদন করে দুটো কোম্পানি, একটি জার্মানির ইটার্না জেন্টারিস অপরটি বাংলাদেশের পপুলার। প্রথমটির তৈরি মিল্টেফসিন ছিল মানসম্মত, পরীক্ষিত, উৎপাদনের অভিজ্ঞতাও ছিল ২ বছরের বেশি। তারপরও কোন এক রহস্যময় কারনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পপুলারের তৈরি মিল্টেফসিন কেনে, যাদের এই ওষুধ তৈরির কোন পুর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। পরবর্তিতে পরীক্ষা করে এও দেখা যায় যে, পপুলারের মিল্টেফসের মধ্যে মিল্টেফসিনেরই কোন অস্থিত্ব নাই। এরকম মোটা দাগের দূর্নীতি দেখে ডব্লিউএইচও তাদের ঋণ দেয়া বন্ধ করে দেয়। শুধুমাত্র পপুলারকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আবারও টেন্ডার ডাকে এবং ২ বছরের অভিজ্ঞতার শর্তটি তুলে নেয়।সরকার ৫ কোটি টাকার কালাজ্বরের ক্যাপসুলের নামে ময়দার দলা কিনে পপুলারের কাছ থেকে এবং পপুলারের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি দেখভাল করে প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার এবং আজকের সুশীল ছাগু সমাজের প্রতিনিধি পিনাকী ভট্টাচার্য। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কয়েকশো রুগিকে পপুলারের তৈরি মিল্টেফসিন ফুল ডোজে খাওয়ানোর পরও তাদের জ্বর কমেনি, পরীক্ষা করে তাদের সবার দেহেই আবার কালাজ্বরের জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। অথচ জার্মানির তৈরি একই ওষুধ খেয়ে আগের সব রুগি সুস্থ হয়ে উঠেছিল।
জেনেশুনে জীবন রক্ষাকারী কোন ড্রাগ নিয়ে মানুষের সাথে এরকম প্রতারণা করা পিনাকীর মত অমানুষের পক্ষেই সম্ভব। মান কিছু কম হতে পারে, তাই বলে ক্যাপসুলের মধ্যে কোন ড্রাগই থাকবে না? পিনাকী ভট্টাচার্য অবশ্য তখনও তার স্বভাবসুলভ ভন্ডামি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে পপুলারের ওষুধ মানসম্মত। অথচ ডব্লিউএইচও নেদারল্যান্ড থেকে পরীক্ষা করিয়ে প্রমাণ করে পপুলারের তৈরি কালাজ্বরের মিল্টেফস ক্যাপসুল সম্পূর্ণভাবে মিল্টেফসিনবিহীন!
অবস্থা বেগতিক দেখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পপুলারের মিল্টফস ক্যাপসুল সরবারহ বন্ধ করে এবং এই ওষুধের সব ধরনের উৎপাদন এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষনা করে।

এ ছাড়াও পিনাকী ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে জুলাই আগস্ট বিপ্লবকে ছাত্রলীগের বি-টীমের বিপ্লব বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টার, বিবিসি সংবাদ মাধ্যমের ভুয়া ফটোকার্ড চাপিয়ে সেটা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর, এবং উগ্রপন্থীদের উস্কানি দিয়ে দেশে মব কালচার স্টাব্লিশ এর মাধ্যমে অন্তবর্তী সরকারকে অস্থির করার চেষ্টার অভিযোগ আছে।
অভিযোগ আছে। এর বাহিরে সম্প্রীতি তার এক কালের বান্ধবী নাদিয়া ইসলাম প্রোগ্রেসিভ বাফ কে দেয়া এক স্বাক্ষাৎকারে পিনাকী ভট্টাচার্যকে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ট বলে দাবি করেন।

ডা.জাহেদুর রহমান।

মোজাম্মেল/হক_কথা


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content