প্রতিনিধি ১৬ মার্চ ২০২৫ , ৫:১৪:৩৪
জসিম তালুকদার, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রায় তিন বছর ধরে অলস পড়ে আছে ওয়াশিং প্ল্যান্ট। ১১০ কেজি ধারণ ক্ষমতার এ মেশিন বসানোর পর মাত্র দুই কেজি কাপড় ধোয়া হয়েছিল। এরপর থেকে কর্মচারী সংকটের কারণে প্রায় ২ কোটি টাকা দামের এ মেশিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। মেশিনের ওয়ারেন্টির মেয়াদও শেষ হওয়ার পথে। এমনকি, নতুন তত্ত্বাবধায়ক হাসপাতালে যোগ দিয়ে মেশিন স্থাপনের ফাইলও খুঁজে পাচ্ছে না। এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি আগের তত্ত্বাবধায়কও।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, প্ল্যান্টটির ওপর ধুলোর আস্তরণ পড়েছে।
জানা গেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে করোনা রোগীদের ব্যবহৃত কাপড়, হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পোশাক পরিষ্কার ও জীবাণু মুক্ত করতে নিজস্ব ওয়াশিং প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য একই বছরের ১৩ জানুয়ারি অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়। এ কাজের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সেখ ফজলে রাব্বি।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফও) সহায়তায় ১ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াশিং মেশিন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ড্রায়ার মেশিন ও আয়রন মেশিন দরপত্রের মাধ্যমে কেনা হয়। চীনের তৈরি এসব মেশিন সরবরাহ করে ঢাকার ‘ব্লু ক্যানভাস লিমিটেড’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মেশিন ও প্ল্যান্ট স্থাপনে খরচ হয় ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সেখ ফজলে রাব্বি তখন জানিয়েছিলেন, ‘রোগী ও হাসপাতালে ব্যবহৃত কাপড় ঠিকাদারদের দিয়ে জীবাণুমুক্ত করাতে অনেক টাকার দরকার হয়, সময়ও বেশি লাগে। এখন নিজস্ব প্ল্যান্টে দ্রুত সময়ে কাপড় জীবাণুমুক্ত করা যাবে বলে আশা করছি। তবে এটি সচল রাখতে প্রয়োজনীয় লোকবল প্রয়োজন।’
আরও জানা গেছে, ওয়াশিং প্ল্যান্টে ১০০ কেজি কাপড় ধোয়া সম্ভব। কিন্তু লোকবল না থাকায় প্রথম থেকেই ঠিকমতো অপারেটিং করা যায়নি। তবে, শুরুতে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে কয়েক কেজি কাপড় ধোয়া হয়েছে। এ মেশিন অপারেটিং করতে প্রশিক্ষিত ২ জন কর্মচারী দরকার।
ওয়াশিং প্ল্যান্টে কাপড় ধোয়ার পর তা সঙ্গে সঙ্গে ইস্ত্রি হয়ে বেরিয়ে আসে। আলাদা করে কাপড় শুকানোর প্রয়োজন হয় না।
দুই বছরেও ওয়াশিং প্ল্যান্ট কেন চালু হয়নি এমন প্রশ্নের উত্তরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আব্দুল মান্নান দৈনিক আজকের বাংলা ও দৈনিক হক কথাকে বলেন, ‘আমি কাজে যোগদানের পর থেকেই এ প্ল্যান্টটি বন্ধ। খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখি, এ প্ল্যান্ট স্থাপনের নথিপত্রসহ যে ফাইল, সেটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আগের তত্ত্বাবধায়ক শেখ ফজলে রাব্বিকে জিজ্ঞাসা করেও সদুত্তর পাইনি। এখন ফাইলপত্র না পেলে আমি কিভাবে প্ল্যান্টটির ভূত-ভবিষ্যৎ বলতে পারি, আপনারাই বলেন?’