সারাদেশ

দেশের ৫ম অবস্থানে বাঁশখালীর বৈলগাঁও চা-বাগান বাঁশখালীর চা-বাগান সড়কটির নাজুক অবস্থা

  প্রতিনিধি ১৯ মার্চ ২০২৫ , ৮:২০:১৪

0Shares

শেয়ার করুন

◽জসিম তালুকদার, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী পর্যটন স্পট বাঁশখালীর পুকুরিয়া বৈলগাঁও চা বাগানটি যেন সবুজের এক মহা সমারোহ। বর্তমানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত পর্যটক চা বাগানটি এক নজরে দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। চা উৎপাদনে এই বাগান বর্তমানে অবস্থান দেশের ৫ম শীর্ষস্থানে রয়েছে। বাঁশখালীতে অবস্থিত ৩ হাজার ৪শ ৭২.৫৩ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত এই চা বাগানটি একসময়ে সিলেট চা বাগানের অধীনে থাকলেও বিগত ২০১৫ সাল থেকে বাগানটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ।
প্রতিদিন ৮ শতাধিক শ্রমিক এই চা বাগানে তাদের শ্রমের মাধ্যমে নতুন পাতা উৎপাদন ট্রেসিং থেকে শুরু করে চা বাগানের সামগ্রিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
চা বাগান কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯১২ সালে ইংরেজরা যখন বাগানটি শুরু করেন তখন বাগানের ম্যানেজার ছিলেন মি: হিগিন।

বুধবার (১৯ মার্চ) সরজমিনে ঘুরতে গিয়ে দেখা যায়,
বাঁশখালীর ৩ হাজার ৪ শত ৭২.৫৩ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই চা বাগানটির প্রায় ৮০০শত একর ভুমিতে চা চাষ হচ্ছে। বিগত অনেকদিন যাবত বৃষ্টি না হওয়াতে বর্তমানে কৃত্রিম উপায়ে পানি সেচ দিয়ে চা বাগান সতেজ রাখা হলেও একদিকে চা পাতার দাম কম অপরদিকে চা বাগানের একমাত্র সড়কটি ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে ভোগান্তি হচ্ছে বলে জানান চা বাগান কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী।

চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর কয়েক লক্ষ টাকা ভুমি কর এবং চা পাতার বিক্রিত অর্থ থেকে সরকার ১৫% হারে ভ্যাট অনুসারে প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে সরকার। অথচ এ চা বাগানে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি অর্ধেক কাঁচা অর্ধেক ইট বিছানো হলেও চলাচলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। এখানে চা বাগানের দৃশ্য ও কার্যক্রম দেখার জন্য প্রতিদিন দুরদুরান্ত থেকে নানা শ্রেণীর দর্শনার্থী সহ সরকারি বেসরকারি লোকের আনা গোনায় মেতে থাকে সারাক্ষণ। অথচ পুকুরিয়া চৌমুহনী থেকে অভ্যান্তরীন আড়াই কিলোমিটার সড়ক পার হয়ে এ চা বাগানের অভ্যান্তরে প্রবেশ করতে হয়। বিগত ৩/৪ বছর আগে আড়াই কিলোমিটার সড়ক থেকে এক কিলোমিটার কার্পেটিং করা হয়। এক কিলোমিটারের সড়কে ইট থাকলে ও তা উঠে গিয়ে গাড়ি চলাচলে চরম ভাবে ভোগান্তি হয়। আর আধাঁ কিলোমিটার কাচাঁ সড়কে বৃষ্টি আসলে গাড়ি চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। চা বাগানের প্রয়োজনীয় মালামাল আনা নেওয়া এ সড়কে চরমভাবে ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে জানান সেখানে বেড়াতে আসা দুর দুরান্তরের দর্শনার্থী এবং চা বাগান কর্তৃপক্ষ। বাঁশখালীর চা বাগানে কচি পাতা আর ক্লোন চা উৎপাদন করায় এই বাগানটি বর্তমানে দেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশীয় চা সংসদ চট্টগ্রাম ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান ও বাঁশখালীর চাঁদপুর বেঁলগাও চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো:আবুল বাশার বলেন, প্রতিবছর ৫০ একর জায়গা চা চাষের আওতায় আনা হয়। তাই দিন দিন চা উৎপাদের আওতায় আসছে নতুন নতুন এলাকা। সিটি গ্রুপ পরিচালিত এ চা বাগানটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র চা বাগান। চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর কয়েক লক্ষ টাকা ভুমি উন্নয়ন কর এবং চা পাতার বিক্রিত অর্থ থেকে সরকার ১৫% হারে ভ্যাট অনুসারে প্রায় দেড় থেকে ২ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে সরকার। দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা এ চা বাগানটির যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে আমাদের ভোগান্তি পড়তে হয় চলাচলে। এছাড়া এখানে প্রায় সময় সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্ব কর্মকর্তা ও নানা শ্রেনীর দর্শনার্থী আসে। রাস্তার কারণে তাদের ও ভোগান্তি হয়। বিগত ৩/৪ বছর আগে এক কিলোমিটার সড়ক সংস্কার হলেও বাকী দেড় কিলোমিটারের সড়ক সংস্কার না হওয়াতে নানা ভাবে সমস্যায় রয়েছি বলে তিনি জানান। সরকারী এই রাজস্ব আয়ের অন্যতম চা-বাগানের যাতায়াতের সড়কটি জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করার জন্য জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বাগানে উৎপাদিত ক্লোন চা স্স্বুাদ ও পুষ্টি সমৃদ্ধ বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ বলেন, চা বাগান সড়কটি সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ডিআর প্রকল্প-২ প্রদান করা হয়েছে। আশা রাখি প্রকল্প অনুমোদন হলে গুরুপ্তপুর্ন সড়কটি সংস্কার করতে পাবর বলে তিনি জানান।


শেয়ার করুন

0Shares

আরও খবর

Sponsered content