প্রতিনিধি ১৯ মার্চ ২০২৫ , ৭:৫৫:০৫
জসিম তালুকদার, চট্টগ্রাম :
ঈদুল ফিতর ২০২৫ কে সামনে রেখে কেনাকাটায় ব্যস্ত বাঁশখালীর মানুষ। ক্রেতাদের ঢল নামেন বাঁশখালী অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা উপজেলা সদর পৌরসভা ,গুনাগরী, মিয়ার বাজার, শীলকূপ টাইম বাজার, চাম্বল বাজার ও নাপোড়াবাজার এলাকায়। তবে এ বছর বাজার করতে ভোগান্তির মাত্রা যেন কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। রাস্তার যানজটের কারণে বাজারের প্রধান সড়ক ও আশপাশের এলাকা কার্যত স্থবির হয়ে পড়তে শুরু করেছে।
বুধবার (১৯মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাড়ির দীর্ঘ সারি, মানুষের প্রচণ্ড ভিড় এবং দোকানিদের ফুটপাত, বাজারের রাস্তার পাশে অবৈধ গাড়িপার্কিং সাজানোর কারণে হাঁটাচলাও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। যানজটের ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে আসা অভিভাবকরা। এমনকি রোগীদের হাসপাতালেও পৌঁছাতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
চাম্বল বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদে আমাদের বেচাকেনা ভালো হচ্ছে, কিন্তু যানজটের কারণে ক্রেতারা ঠিকমতো বাজারে ঢুকতে পারছেন না। অনেকেই বিরক্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এটা আমাদের বিক্রিতেও প্রভাব ফেলছে।
গুনাগরী ব্যবসায়ী পলাশ দেব বলেন, বছরের সবচেয়ে বড় ব্যবসা হয় এই সময়টায়। কিন্তু যানজটের কারণে ক্রেতারা আমাদের দোকানে আসতেই কষ্ট হচ্ছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। সামনে ঈদ বাজার করতে আসা মানুষদের দুর্ভোগ যেন পোহাতে না হয়। সকাল থেকেই যানজটে আটকে থাকতে হয়, আর সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি আরও চরমে হয়ে ওঠে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য এই ভোগান্তি আরও বেশি।
ক্রেতা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমি সকাল ১০টায় রোজা রেখে বের হয়েছি, কিন্তু মাত্র দুই-তিনটা দোকান ঘুরতেই দুপুর হয়ে গেছে। প্রচণ্ড ভিড়, রাস্তায় ধূলাবালি, গরম আর যানজটের মধ্যে হাঁটতেই কষ্ট হচ্ছে।
আরেক ক্রেতা কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, আমরা কয়েকজন বান্ধবী মিলে ঈদের শপিং করতে এসেছি। কিন্তু এই যানজট ও ভিড়ের কারণে খুব সমস্যা হচ্ছে। রাস্তার পাশে দাঁড়ালেও ধুলো-বালি আর যানবাহনের শব্দে দম বন্ধ হয়ে আসছে।
বয়স্ক ক্রেতা মোঃ জাকের আহমদ বলেন, আমি বৃদ্ধ মানুষ, হাঁটতে কষ্ট হয়। কিন্তু এখানে তো হাঁটারও জায়গা নেই। সবাই ধাক্কাধাক্কি করছে, গাড়ি-রিকশা যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। কীভাবে কেনাকাটা করব?
চট্টগ্রামগামী এক অ্যাম্বুলেন্স চালক বলেন, জরুরি রোগী নিয়ে যেতে গেলে ভয় লাগে, কখন যে কোথায় আটকে যাব। বিশেষ করে চাম্বল বাজার, শীকূপ টাইমবাজার,
গুণাগরী এর সামনের অংশটুকু পার করা খুবই কষ্ট সাধ্য।
তিনি আরো বলেন,অন্তত ঈদে যানজট নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা দরকার। রাস্তায় যানবাহন চলাচল ঠিক রাখতে ট্রাপিকপুলিশ ব্যবস্হা প্রয়োজন। কিন্তু মানুষজন আইন মানছেন না, ফলে সমস্যাটা আরও বাড়ছে।
তবে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা চান আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তারা মনে করেন, অস্থায়ী দোকানগুলোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্দ করা, অবৈধ পার্কিং নিয়ন্ত্রণ, ফুটপাত দখলমুক্ত করা ও যানবাহনের প্রধান সড়কটিকে যানজন মুক্তকরা হলে যানজট ও ভোগান্তি কমে আসবে।
স্হানীয়া একাধিক বাসিন্দা বলেছেন, প্রশাসন শুধু আশ্বাস দেয়, কিন্তু বাস্তবে কোনো পরিবর্তন হয় না। প্রতি বছর ঈদের সময় একই সমস্যা হয়, কিন্তু সমাধান আসে না।