শাহাদাত হোসেন, হাতিয়া প্রতিনিধি-
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বসবাসকারী প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের জীবনযাত্রা চরম দুর্ভোগের শিকার। যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ হলেও, এখানে নিরাপদ নৌযানের তীব্র সংকট। উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভরসা সেই কাঠের তৈরি নৌকা আর মাছ ধরার ট্রলার।
দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সমস্যা স্থানীয়দের নিত্যদিনের সঙ্গী। যদিও সরকারি সংস্থা বিআইডব্লিউটিসি (BIWTC) অনুমোদিত একটি সি-ট্রাক থাকলেও, সেটি নিয়ে ঘাট ইজারাদারদের সাথে প্রায়শই সমস্যা লেগেই থাকে। ফলে যাত্রীরা নিয়মিতভাবে হয়রানির শিকার হন।
আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার এর পতনের পর, সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবি তুলে ধরে। আন্দোলনের মুখে বিআইডব্লিউটিসি 'নিঝুমদ্বীপ' নামের একটি নতুন সি-ট্রাক দেওয়ার আশ্বাস দিলেও, সেটির কোনো বাস্তবায়ন আজও হয়নি। একই সময়ে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ হাতিয়ার জনগণের জন্য একটি ফেরি চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও সেই ফেরির দেখা মেলেনি।
সাধারণ মানুষের এই লাগাতার আন্দোলন যখন তীব্র হয়, তখন ঘাট ইজারাদাররা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। তারা চেয়ারম্যান ঘাট থেকে হাতিয়া রুটে দুটি লঞ্চ নিয়ে আসে, যা কিছুদিন চলার পর আবার রহস্যজনকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে আবারও অনিরাপদ কাঠের নৌকা এবং মাছ ধরার ট্রলারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।
গত কয়েকদিন আগে ঢাকায় বসবাসরত হাতিয়ার শিক্ষার্থীরা ফেরি চালুর দাবিতে আন্দোলন করলে, পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। আন্দোলনকারীদের চাপে ঘাট ইজারাদাররা একটি ভাঙাচোরা, জরাজীর্ণ সি-ট্রাক নিয়ে আসে, যা কার্যত চলাচলের জন্য অনুপযোগী। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
হাতিয়ার সাধারণ মানুষ এখন তাদের এই দুর্দশার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপের অপেক্ষায় আছেন। নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য নৌযানের অভাবে তাদের দৈনন্দিন জীবন, জরুরি চিকিৎসা সেবা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সম্পাদকঃ মাহবুবা আক্তার। অফিসঃ ৭৫ ই-ব্রডওয়ে,নিউইয়র্ক এনওয়াই ১০০০২।ফোন:+৮৮০১৭১২৯০৩৪০১ ই- মেইলঃ dailyhaquekotha@gmail.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ