প্রতিনিধি ২০ অক্টোবর ২০২৫ , ১০:৩৬:৪২

গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ডের শান্তিপ্রিয় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলছে এক রিসোর্টের ছদ্মবেশে পাপের সাম্রাজ্য। স্থানীয়দের অভিযোগ, “রিভেরি রিসোর্ট” নামের ওই স্থাপনা এখন পরিণত হয়েছে নারী ব্যবসা, মাদক সেবন, জুয়া খেলা ও অশ্লীলতার আসরে।
প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকেই রিসোর্টে প্রবেশ করে অচেনা নারী ও যুবকদের দল। রাতভর সেখানে চলে মাদক সেবন, যৌন ব্যবসা, জুয়া খেলা, অশ্লীল নাচ-গান এবং অশালীন পার্টি। এলাকাবাসীর দাবি, ভেতরে প্রতিদিনই চলে “রাত্রিকালীন পার্টির” নামে অসামাজিক কার্যক্রম, যা পুরো এলাকার পরিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে ডিজে সাউন্ড বাজানো, মাতাল যুবকদের চিৎকার-চেঁচামেচি, গাড়ির হর্ণের শব্দে আশপাশের মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না। এমনকি সকালে রাস্তায় পড়ে থাকে মদের বোতল, সিগারেটের প্যাকেট, কনডম ও জুয়ার তাস— যা প্রমাণ করে কীভাবে রিসোর্টটি অবাধে অনৈতিক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এলাকাবাসী বলেন, “রিসোর্টের নামে চলছে পাপের আখড়া। এখানে আসা অনেকেই প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণ করে, নারী পাচারের ঘটনাও আমরা সন্দেহ করি। তরুণ সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এই রিসোর্ট।”
অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ এত বছর ধরে অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে এলাকাবাসী এই রিসোর্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে আসলেও প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকায় আছে।
স্থানীয় সমাজপতি ও প্রবীণরা বলেন, “যেই রিসোর্টে মাদক, জুয়া আর নারী ব্যবসা চলে, সেটি কখনোই হালাল হতে পারে না। যারা প্রতিবাদ করে, তাদের হয়রানি করা হয়, মামলা দিয়ে ভয় দেখানো হয়।”
প্রসঙ্গত, রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অতীতে নারী ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ সংক্রান্ত মামলাও থানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবুও রিসোর্ট বন্ধ না হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
প্রায় ২ থেকে ৩ মাস আগে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে রিসোর্ট বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, “আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। কিন্তু এই রিসোর্টের কারণে এলাকায় অশান্তি, তরুণদের নৈতিক অবক্ষয় আর ভয়-ভীতি বাড়ছে। রিসোর্ট বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।

















