প্রতিনিধি ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১:২৮:৩০

বাংলাদেশের ইতিহাসের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের সাহসী প্রতীক বেগম খালেদা জিয়া আজ নতুন এক চিকিৎসা অধ্যায়ের পথে। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে লন্ডনের লন্ডন ব্রিজ হাসপাতালে উন্নত জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসার জন্য তাঁর যাত্রা শুরু হচ্ছে।
এটি শুধু একটি চিকিৎসা যাত্রা নয়, এ এক গভীর মানবিক গল্পের ধারাবাহিকতা। এক ভালোবাসার মা, যাকে কোটি মানুষ শ্রদ্ধা করে, তিনি যাচ্ছেন তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমানের কাছে। দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে অবস্থানরত তাঁর এই সন্তান উদ্বিগ্ন হৃদয়ে অপেক্ষা করে আছেন। একদিকে জনগণের জন্য লড়াই, অন্যদিকে মায়ের জীবন নিয়ে দিন-রাতের দুশ্চিন্তা। বিশ্বমানের চিকিৎসকদের সাথে তিনি নিয়মিত আলোচনা করে প্রতিটি ধাপ, প্রতিটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। যখনই চিকিৎসকেরা অনুমতি দেবেন, তখনই সর্বোত্তম চিকিৎসাসুবিধা নিয়ে এই যাত্রা শুরু হবে। সে প্রস্তুতি অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে।
মা’র পাশে থাকবেন প্রিয় পুত্রবধূ, ডা. জুবাইদা রহমান, সম্মানিত পেশাজীবী এবং নিবেদিত পরিবারের সদস্য। যিনি এই কঠিন সময়ে মা-ছেলে ও একমাত্র মেয়ে সন্তান জাইমা রহমান সহ পরিবারের সকলকে সাহস জুগিয়াছেন। সঙ্গে থাকবেন ড. রিচার্ড বীল এবং বাংলাদেশের একটি বিশেষায়িত চিকিৎসক দল। ছেলে তারেক রহমান কাতার এয়ারওয়েজের মেডিকেল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের পুরো ব্যবস্থাই করেছেন ওনার বিশেষ ও জটিল চিকিৎসা-সহায়তার কথা ভেবে।
কিন্তু এই মানবিক পরিস্থিতিতেও একদল অসৎ অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিস্টস এবং একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নির্লজ্জভাবে গুজব ছড়িয়ে এসেছে। কেউ বলেছে খালেদা জিয়া আর জীবিত নন, বিএনপি সত্য গোপন করছে; তারেক রহমান দেশে ফিরছেন না কারণ তিনি নাকি “ভয় পাচ্ছেন”! এরা নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছে। আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারেক রহমান ও বিএনপির জনপ্রিয়তার গোড়ায় আঘাত হানতে চেয়েছে।
কিন্তু সত্যের কাছে মিথ্যা টিকেনি। আজ প্রমাণ হয়েছে সব গুজব ছিল ভিত্তিহীন, ঘৃণ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
খালেদা জিয়া জীবিত, চিকিৎসাধীন এবং দেশ ও পরিবারের সকলের ভালোবাসার পরিমণ্ডলে ঘেরা। তারেক রহমান তাঁর মায়ের প্রতিটি মুহূর্ত ভাবনায় রেখেই এই দিনের প্রস্তুতি করেছেন। তিনি কখনোই মায়ের চিকিৎসাকে রাজনীতির সরঞ্জাম বানাননি, বরং দেশের প্রতি কর্তব্য আর সর্বোচ্চ মানবিক দায়িত্ব পালন করেছেন।
জাতির এই মুহূর্ত কারো রাজনৈতিক আক্রমণের সুযোগ নেওয়ার নয়। এই সময়টি জাতির একত্র হওয়ার। যে নারী বছরের পর বছর কারাবরণ করেছেন, অন্যায়-অবিচার সহ্য করেছেন, তবুও মাথা নত করেননি, তিনি শুধু একজন নেত্রী নন, জাতির মা।
নিজ মাটির বুক ছেড়ে আজ তিনি যাচ্ছেন শুধু বেঁচে থাকার লড়াইয়ে। আমাদের আকুল প্রার্থনা তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন, আরও শক্ত হয়ে, আরও দৃপ্ত হয়ে। এ প্রত্যাবর্তন হবে মানবতা, সত্য ও ন্যায়ের জয়গান।
চলুন আমরা দোয়া করি, সহমর্মিতা ছড়াই, মিথ্যাকে পরাজিত করি। বাংলাদেশের হৃদয়ে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ফিরে আসবেন আশার মতো, বিজয়ের মতো, এই বাংলার বুকেই।
বাংলাদেশ অপেক্ষা করবে মা’কে ফিরে পাওয়ার।
লিখেছেনঃ ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা

















