প্রতিনিধি ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১:৫৩:২৮

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর হাতিয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক মতবিনিময় সভায় দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার পর সুখচর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজমীর হোসেন বাদশা আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর ২০২৫) এক বিবৃতিতে আজমীর হোসেন বাদশা বলেন, ওই দিনের কর্মসূচিতে তার দেওয়া বক্তব্য ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনিচ্ছাকৃত। তিনি স্বীকার করেন, তিনি ভালো বক্তা নন এবং বক্তব্য দিতে গিয়ে কিছু মন্তব্য অনভিপ্রেতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। এজন্য তিনি হাতিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ, অঙ্গসংগঠনের অন্যান্য নেতা ও দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের প্রতি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সবাইকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে যেভাবে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তা অনভিপ্রেত। তিনি স্পষ্ট করে জানান, আদর্শিকভাবে তিনি বিএনপি করেন, তার দল বিএনপি এবং তার প্রতীক ধানের শীষ। তিনি কোনো দলছুট বা ব্যক্তি-পূজার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন বলেও উল্লেখ করেন। নিজের ভুল কিংবা ব্যক্তিগত অভিমান থাকতে পারে স্বীকার করে তিনি বলেন, সেগুলো সংশোধনের জন্য দলের রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে বিএনপির ধানের শীষের কাণ্ডারি মাহবুবের রহমান শামীম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আদনান এবং সদস্য সচিব সুমন তালুকদার রয়েছেন।
সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঘোলা জলে মাছ শিকার না করে সবাই যেন আত্মসমালোচনা করেন এবং দলের জন্য ও দলীয় প্রার্থীর জন্য নিজেদের ভূমিকা কী, তা ভেবে দেখেন। তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, অতীতেও তিনি দলের পাশে ছিলেন, বর্তমানে আছেন এবং ভবিষ্যতেও দলের প্রয়োজনে পাশে থাকবেন ইনশাল্লাহ। একই সঙ্গে তিনি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দলছুট ও ব্যক্তি-পূজার রাজনীতিকে দলের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করে হাতিয়ার গ্রুপিং রাজনীতির সমালোচনা করেন। অতীতে এ ধরনের রাজনীতির কারণে দলের যে ক্ষতি হয়েছে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সবাইকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় অনুষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবক দলের ওই মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে আজমীর হোসেন বাদশা বলেন, “আমাদের নেতা কে আমরা জানি না, আমরা কার কাছে যাবো। দলে এত পরিমাণ হাইব্রিড ঢুকেছে যে কিছুদিন পর আমাদের খানা পেলেট থাকবে না।” তিনি বিএনপির অতীতের অবস্থার কথা উল্লেখ করে হতাশা প্রকাশ করেন এবং মাহবুবের রহমান শামীমকে নিয়েও মন্তব্য করেন। একপর্যায়ে হাতিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব তার বক্তব্যে বাধা দিলে তিনি বলেন, “সত্য কথা বলতে গেলে সমস্যা।”
সভায় দেওয়া ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ কেউ বক্তব্যকে দলের ভেতরের বাস্তব চিত্র তুলে ধরা বলে মন্তব্য করেন, আবার অনেকে এটিকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী বলে সমালোচনা করেন। বিষয়টি নিয়ে হাতিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বিবৃতির শেষাংশে আজমীর হোসেন বাদশা দেশ ও দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, ধানের শীষ জিন্দাবাদ।”











