সারাদেশ

ভুয়া ভিসায় বিদেশ যেতে না পেরে দালালের বাড়িতে অনশন

  প্রতিনিধি ১ এপ্রিল ২০২৪ , ১:২৬:০৮

শেয়ার করুন

দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশ যেতে পারেননি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ছয় যুবক। সম্প্রতি ভুয়া ভিসা পেয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর সরাসরি দালালের বাড়িতে হাজির হয়ে টানা নয় দিন ধরে অবস্থান করছেন ওই ৬ যুবক।

ভুয়া ভিসায় বিদেশ যেতে না পেরে দালালের বাড়িতে বিদেশগামীদের অনশন
ভুয়া ভিসায় বিদেশ যেতে না পেরে দালালের বাড়িতে বিদেশগামীদের অনশন
দালালের খপ্পরে পড়ে বিদেশ যেতে পারেননি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ছয় যুবক। সম্প্রতি ভুয়া ভিসা পেয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর সরাসরি দালালের বাড়িতে হাজির হয়ে টানা নয় দিন ধরে অবস্থান করছেন ওই ৬ যুবক
তবে এবার বিদেশ যেতে নয়, টাকা ফেরত না নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরবেন না তারা। রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে উপজেলার জিন্দারপুর গ্রামের বাসিন্দা ও দালাল সুলতান মাহমুদ ওরফে মাবুদের বাড়িতে ওই ছয় যুবককে অবস্থান করতে দেখা যায়। অবস্থানরত যুবকরা হলেন- উপজেলার পাঁচগ্রামের আতিকুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, আব্দুল ওয়াদুদ, আলামিন তালুকদার, মোলামগাড়ীহাটের মেহেদী হাসান, জিন্দারপুর গ্রামের আবু তাহের।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, জিন্দারপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সুলতান মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠান। আড়াই বছর আগে একই এলাকার পাঁচগ্রাম, মোলামগাড়ীহাট ও জিন্দারপুর গ্রামের ওই ছয়জন যুবক একসঙ্গে মালয়েশিয়ায় যেতে প্রত্যেকে সাড়ে ৫ লাখ টাকা করে চুক্তিবদ্ধ হন সুলতান মাহমুদের সঙ্গে। চুক্তির টাকা তারা পরিশোধও করেছেন। তবে এরপর থেকে পার করে দেবো, দিচ্ছি বলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন মাহমুদ। মাঝে ছয় মাস আগে মালয়েশিয়ায় নয়, তাজিকিস্তান পাঠানোর কথা হয়। তাতেও রাজি হন ওই যুবকরা।

পরবর্তীতে অনেক দেরিতে হলেও চলতি বছরের ১৮ মার্চ ওই ছয় যুবককে বাড়ি থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় তাজিকিস্তানের উদ্দেশে। পরে ২০ মার্চ রাতে এক বুক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশ পাড়ি জমানোর উদ্দেশ্যে টিকিটসহ কাগজপত্র হাতে পেয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত হন ওই ছয় যুবক। এয়ারপোর্টে চেকিংয়ে গিয়ে জানতে পারেন ম্যানপাওয়ার, ভিসা, বিএমইটি স্মার্ট কার্ড জালিয়াতি করে তাদের ভুয়া কাগজপত্র দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র বিমানের টিকিট ছিল আসল। পরে এয়ারপোর্ট থেকে তাদের ফেরত আসতে হয়। এরপর থেকে তারা নিজ বাড়িতে না গিয়ে সুলতান মাহমুদের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।বর্তমানে ওই ছয় যুবক সুলতান মাহমুদের বাড়ির ভেতর রশি দিয়ে বাঁধা লাগেজ নিয়ে অবস্থান করছেন। সব ঘরের দরজা বন্ধ। বাড়িতে সুলতান মাহমুদের মা, বড় ভাই ও মামা রয়েছেন। কেবল সুলতান মাহমুদ নেই। ভুক্তভোগী যুবকরা বলেন, আমরা সবাই নিঃস্ব। এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি এসে এ বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি।

তারা জানান, বুধবার রাতে মাহমুদের সঙ্গে তাদের দেখা হয়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য তার বাড়িতে বৈঠকও করেছেন। কিন্তু মাহমুদ বৈঠকের পর অবস্থা বেগতিক বুঝে উদ্ধারের জন্য জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। ওই সময় পুলিশ যুবকদেরও থানায় আসতে বলে। পরে যুবকরা থানায় আসলে মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বললে তারা অস্বীকৃতি জানায়। এরপর থানা থেকে ফিরে গিয়ে তারা আবারও মাহমুদের বাড়িতে অবস্থান নেন। যতক্ষণ পর্যন্ত এ ঘটনার সুরাহা হচ্ছে না, ততক্ষণ ওই বাড়িতেই অবস্থান করবেন বলেও জানিয়েন তারা।ছয় মাস আগে মালয়েশিয়াতে যাদের পাঠিয়েছেন তারা এখন বন্দী- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা এখনো কাজ পায়নি, আমার হেফাজতেই তারা রয়েছেন। খরচ যা লাগছে দিচ্ছি। কয়েকদিনের মধ্যেই তাদেরও ব্যবস্থা হবে।

এ বিষয়ে কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওয়াসিম আল বারী বলেন, জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। প্রতারিত যুবকদের অভিযোগ দিতে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তারা অভিযোগ দিতে নারাজ। মাবুদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content