আন্তর্জাতিক

ধর্মীয় গ্রন্থ প্রকাশ্যে পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চান বেশিরভাগ সুইডিশগন

  প্রতিনিধি ৭ জুলাই ২০২৩ , ১২:০০:৫২

শেয়ার করুন

পবিত্র কোরআন বা বাইবেলের মতো ধর্মীয় গ্রন্থ প্রকাশ্যে পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা চান বেশিরভাগ সুইডিশ জনগণ। সুইডেনের জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেল এসভিটির এক নতুন জরিপ এই তথ্য উঠে এসেছে। গত সপ্তাহে ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর এক ঘটনার পর স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশটির জনগণের মাঝে উল্লেখযোগ্য এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।

কান্তার পাবলিক নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওই সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। এতে অংশ নেওয়া ৫৩ শতাংশ মানুষ বলেছেন, জনসমক্ষে যেকোনও ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ পোড়ানো নিষিদ্ধ করা উচিত। আর ৩৪ শতাংশ মানুষ ধর্মগ্রন্থ পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া উচিত বলে মতামত জানালেও ১৩ শতাংশ মানুষ এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি।

 

সুইডিশ টেলিভিশন নেটওয়ার্ক টিভি-ফোরের জন্য গত ফেব্রুয়ারিতে কান্তার পাবলিক একই ধরনের একটি মতামত জরিপ পরিচালনা করেছিল। ওই সময়ের তুলনায় এবারের জরিপে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞায় ১১ শতাংশ বেশি মানুষ তাদের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

গত সপ্তাহে ঈদুল আজহার দিন স্টকহোমের একটি মসজিদের সামনে এক ব্যক্তিকে কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছিল সুইডেনের আদালত। পুলিশি পাহাড়ায় কোরআন পোড়ানোর ওই ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে ব্যাপক নিন্দা ও সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি। এর মাঝেই বৃহস্পতিবার কোরআন পোড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে নতুন জরিপের ফল প্রকাশ করেছে কান্তার।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশেষ করে এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের সুইডেনে প্রকাশ্যে কোরআন পোড়ানোর ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ শুক্রবার দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। খ্রিস্টান ধর্মের রোমান ক্যাথলিক শাখার প্রধান ধর্ম গুরু পোপ ফ্রান্সিস এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, তিনি ‘ক্ষুব্ধ এবং বিরক্ত’। এই বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘ শিগগিরই বৈঠকে বসতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ADVERTISEMENT

কান্তার পাবলিকের মতামত বিভাগের প্রধান টোইভো সোজোরেন এসভিটিকে বলেছেন, বৈশ্বিক এমন প্রতিক্রিয়া জনমত পরিবর্তনে প্রভাব ফেলতে পারে।

এদিকে, কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে সুইডেনের যোগদানে বাগড়া দিয়েছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান গত সপ্তাহে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সুইডেনের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, আমরা অহংকারী পশ্চিমাদের শেখাবো, মুসলিমদের পবিত্র মূল্যবোধকে অপমান করা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নয়।

বেশিরভাগ সুইডিশ এখন ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানোর বিরোধিতা করলেও দেশটিতে এই চর্চা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ চলতি বছরে দুটি কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দিতে দেশটির পুলিশ অস্বীকৃতি জানালেও পরবর্তীতে সুইডেনের আপিল আদালত পুলিশের সেই সিদ্ধান্ত নাকচ করে দিয়েছে।

বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসি পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের ভবিষ্যৎ অবমাননা এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানোর পর সুইডিশ সরকারও ‘ইসলামভীতিমূলক’ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে।

সর্বশেষ কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পর সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কোরআন বা অন্য কোনও পবিত্র গ্রন্থ পোড়ানোর বিষয়টি আপত্তিকর, অসম্মানজনক কাজ এবং স্পষ্ট উসকানি। সুইডেন বা ইউরোপে বর্ণবাদ, বিদেশিদের সম্পর্কে অহেতুক ভয় এবং এ সংশ্লিষ্ট অসহিষ্ণুতার কোনও স্থান নেই।

সূত্র: আল-জাজিরা

 


শেয়ার করুন

আরও খবর

Sponsered content