সারাদেশ

দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে দক্ষিণের আশীর্বাদ বঙ্গমাতা সেতু

  প্রতিনিধি ১৬ আগস্ট ২০২৩ , ৩:৪৭:৩৬

শেয়ার করুন

 

 

 

বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু (বেকুটিয়া সেতু) দক্ষিণাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু। উদ্বোধনের পর থেকে ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এটি যেমন একটি দর্শনীয় স্থান তেমনি যোগাযোগ ও পরিবহনে এ সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।

দেশের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর। যার একটি দক্ষিণাঞ্চলের পূর্ব ও অন্যটি পশ্চিমে অবস্থিত। তাছাড়া বিশ্বের অন্যতম সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা আর স্থলবন্দর বেনাপোলও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। আর এসব কিছুরই সেতুবন্ধন বঙ্গমাতা সেতু। ফলে এ সকল রুটে যাতায়াতকারী যানবাহন টোল দিয়ে এই সেতু অতিক্রম করে। গত প্রায় এক বছরে এ সেতু দিযে মোট ৩ লাখ ৭ হাজার যানবাহন পারাপার হয়েছে। আর এসব যানবাহন থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকার রাজস্ব অর্জিত হয়েছে। ফেরি পারাপারকালীন সময়ে মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকা রাজস্ব অর্জিত হলেও সেতু হওয়ায় এ আয় প্রায় তিনগুণ বেড়ে ২৮ লাখ টাকায় পৌঁছেছে। ফলে এটি দেশের একটি আয়বর্ধক খাতে পরিণত হয়েছে।

যশোর থেকে ট্রাকযোগে মালামাল নিয়ে আসা চালক মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই পথে দীর্ঘ ৮ থেকে ১০ বছর ধরে মালামাল নিয়ে আসা-যাওয়া করি। আগে এখান থেকে যাওয়ার সময় বেকুটিয়া ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হত এবং সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হত। কিন্তু বঙ্গমাতা সেতু হওয়ার পর তিন থেকে চার ঘণ্টা সময়ের পথ মাত্র ৪ থেকে ৫ মিনিটেই অতিক্রম করতে পারি। এতে আমাদের যেমন কষ্ট লাঘব হয়েছে তেমনি আগের থেকে খরচও কম হচ্ছে।

সেতু এলাকার বাসিন্দা আজমীর হোসেন মাঝি বলেন, আগে আমাদের এই এলাকা খুবই অনুন্নত ছিল। কিন্তু বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু হওয়ার পর আমাদের এই এলাকার জায়গা-জমির দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি কলকারখানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বঙ্গমাতা সেতুর কারণে আমাদের জীবনমান অনেক পরিবর্তন হতে শুরু করেছে।

 

জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা নকিব বলেন, আগে পিরোজপুরের ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনে অনেক বেশি খরচ হত। সেতুর কারণে এখন খরচের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। মালামালের ট্রাক ফেরিঘাটে আগে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সময় অপচয় হত। এখন আর সময় অপচয় হয় না। এছাড়া সেতু হওয়ায় এই এলাকায় ছোট-বড় বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। সেতুটি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে।

পিরোজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ জানান, যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় গড়ে উঠছে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা। এদিকে যানবাহন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজস্বও বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে দেশের জিডিপিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বঙ্গমাতা সেতু।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করেন।


শেয়ার করুন